সারাদিন যন্ত্রের মত জীবনটা কাটানোর পর,
ঠিক বিকেলের দিকে সব পাল্টাতে শুরু করে।
সূর্যের তেজ কমে আসে, সোনালী রেখার
আঁকড় লাগে মেঘেদের গায়ে, পাখিদের মধ্যে কেমন যেন ব্যাস্ততা বেড়ে যায়।
আর তখনই শরীরের মধ্যে কি কি যেন ঘটতে শুরু করে!
গায়ের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে থাকে, মাথার মধ্যে কত শব্দ এলো মেলো দানা বাঁধতে থাকে, গলার কাছে কিছু অনামী সুর বাউন্সিং বলের মত লাফাতে থাকে...
আর মানুষটা তখন বুকের বাঁ দিকটা চেপে ধরে, তালগোল পাকতে থাকা হৃদপিন্ডের ধুকপুকানি টা সামলাতে সামলাতে অলি গলি পেড়িয়ে এসে দাঁড়ায় বড় রাস্তার মোড়ে।
মানুষটা ভাবতে থাকে সেই কবে কোন যুগে শেষ বিকেল দেখেছিল, প্রান ভরে নিঃশ্বাস নিয়েছিল, সোনালী স্বপ্নের হাতে হাত রেখে বলেছিল, "ভালোবাসা "!
কে যেন একটা সাদা কাগজ ধরিয়ে দেয় হাতে। মানুষটার চোখে ঘোর লাগে।
তখন শহরের পশ্চিম দিকে কোনো ফ্লাইওভার এর পাশে সার বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকা উঁচু বাড়ি গুলোর পেছনে লাল সূর্য লুকোচুরি খেলতে খেলতে হঠাৎই হারিয়ে যায় ধূসরে।
শহরে সন্ধ্যে নামলে মানুষটার গায়ে ধূম জ্বর আসে।
চোখ ঘোলাটে, নিঃশ্বাস পড়ছে কিনা, হৃদপিণ্ড চলছে কিনা বোঝা দায়!
স্ট্রিট লাইটের আলোছায়া গায়ে জড়িয়ে, সাদা কাগজ হাতে, টলতে টলতে মানুষটা রাস্তার ঠিক মাঝখানে এসে দাঁড়ায়।
হঠাৎ আলোর ঝলকানিতে তার মনে পড়ে যায় ফেলে আসা সেই স্বপ্নের মুখ...
তারপর, লাল রঙ পড়ে কাগজে -
ভেসে যায় ভালবাসা।
মানুষটার নিথর শরীর শুয়ে থাকে রাস্তায়, সারা রাত ধরে, শান্ত বুকে যেন সেই ধলেশ্বরী নদীর তীরের অনন্ত গোধূলি লগ্নের প্রতীক্ষায়।।