Sunday, 26 April 2020

কোনো এক দ্বিপ্রাহরিক ব্যাস্ততাকে পাশ কাটিয়ে 
শহুরে পথে গোলাপ বিক্রি হতেই পারে।
মেঘলা আকাশ খোলা ছাদে অঝোর মনে 
সন্ধ্যে মাখা শৌখিনতা হতেই পারে।
হতেই পারে দেবদারু গাছ, নতুন পাতা
সবুজে সবুজ অভিসারিকা।
হতেই পারে একটুখানি আশকারা ভাব চারপাশের হাওয়ায় ছিল।
তাই দামী কোনো সুগন্ধিকে হার মানিয়ে 
গায়ে একটা আদর মাখা গন্ধ ছিল। 

ঠোঁটের ওপর কালশিটেটা স্পষ্ট ছিল।
জিভে যেন নোনতা মেজাজ আলগা ছিল।
শার্টের বোতাম বুকের কাছে খোলাই ছিল।
আর এলো খোঁপার কাঁটায় গাঁথা 
স্বপ্নে মোড়া তারা ছিল,
সেইদিনকে গায়ে একটা আদর মাখা গন্ধ ছিল।।

Monday, 20 April 2020

সুখ - শাড়ী কথা



একটা শাড়ী দিও আমায়?
ঘন নীল তার জমি আর সোনালী জরি বোনা সরু তার সীমানা।
সুতি না রেশম?- সে তোমার যা খুশি,
শুধু খেয়াল রেখো, শাড়ীটা গায়ে দিয়ে যেন আমার তোমায় মনে পড়ে। 
প্রথম প্রথম যত্নে রাখব তুলে, কথা দিচ্ছি। 
পরিপাটি হবে প্রতিটা ভাঁজ, শাড়ীর সাথে একটু বেশি সাজ।
শুধু সখের অনুষ্ঠানেই গায়ে তুলব। 
তারপর  ধীরে ধীরে পাল্টাবে সব।
শাড়ীর চকচকে, খসখসে ভাব কোমল হবে আরও। 
এদিক ওদিক নাছোড়বান্দা কিছু দাগ পড়বে,
শৌখিন নীল জমি ধীরে ধীরে আটপৌরে হবে।
সূক্ষ্ম সোনালী সুতোয় অনাকাঙ্ক্ষিত কয়েকটা টান, আসবে একটু যেন খাপছাড়া ভাব।
তুলে রাখা শাড়ী  হবে দৈনন্দিন। 
সখ হবে প্রাত্যহিক জীবন যাপন।
একটা এমন শাড়ী দিও আমায়,
যেটা ছাড়া,  আমার শীত গ্রীষ্ম বর্ষা হবে না মনের মত।
কুটনো কাটার সময় ভেজা হাত, রান্নার বাড়তি হলুদ বা তেল মাখা হাত, 
সেই শাড়ির আঁচলে না মুছলে আমার ভাত হজম হবে না।
এমন শাড়ী, যেটার নীল জমি আর সোনালী পাড়, যখন আমার বাড়ীর বারান্দায় রোদ পোহাবে, তখন সামনের বাড়ীর মেয়েটা যেন তার স্বপ্ন আঁকতে পারে আমার দৈনন্দিন শাড়ীর গায়ে,
পাশের বাড়ীর ছেলেটা যেন দুচার লাইন কবিতা লিখতে পারে তার নীল কালির সোনালী নিবের পেন দিয়ে।
এমন একটা শাড়ী দিও, যেটায় আমি তোমায় দেখতে পাব।
একটু নতুন, একটু যেন পুরোনো ধরন,
আমার গন্ধে মানানসই হবে, আমার দুঃখ গুলো রাঙিয়ে দেবে, 
আমায় একটা শাড়ী দিও
ঠিক তোমার মত 
আমায় একটা সুখ দিও।।

Tuesday, 14 April 2020

।। শুভ পয়লা বৈশাখ, ১৪২৭।।



দূরে থাকো তুমি, দূরে থাকো ভালোবাসা। 
হাওয়ায় মিশেছে বিষ, তাই নিষিদ্ধ যাওয়া আসা।
গাছে দাও জল, সাজাও গুছানো ঘর।
দূরে থাকো ভালোবাসা, এ বৈশাখী বেদনা বিধুর।
আকাশের গায়ে আঁকো মেঘ, ভাঙা ছাদে ভিজে যায় একা একা কাক।
যে চিঠি লিখেছো রাত জেগে, নীল খামে তুলে রাখা থাক।
পড়ন্ত বিকেলে জানি মনে পড়ে যাবে
কিছু অভিমান বাকি ছিল, 
কিছু কথা বলা হয়নি অকারণ রাগে।
জেনো বৈশাখ একলা হয় না কখনো,
দেখো তুমি চোখ বুজে, আমি আছি, আছে সবই, ঠিক যেমনটা ছিল আগে।
অসময়ে তবু, এসো জানলার ধার ঘেঁষে দাঁড়াও।
দিনে রোদ আর রাতে চাঁদ মাখো মুখে।
এভাবেই দূরে থেকো তুমি, দূরে থেকো ভালোবাসা, আর থেকো সুখে।।

Friday, 10 April 2020

অপ্রার্থিত

একদিন সকালে হঠাৎ করেই
সূর্য ওঠার ঠিকআগে, সব পাখিরা
একসাথে  বসেছিল আমার বাড়ির বারান্দা। 
ডেকেছিল নানা সুরে।

সুতরাং নির্দিষ্টসম্যের আগেই ঘুম ভেঙেছিল।
তাই পুরো গল্পটা শেষকরা হয়নি।
ঐ যে সেই গল্পটা, যেটা সারা রাত অল্প অল্প করে
তুই আর আমি লিখছিলাম...
যে গল্পটা একই চোখের পাতায় দুজনে একসাথে
দুরকম কালিতে রোজ রাতে লিখতে বসি।
নানারকম অনুভূতি অভিজ্ঞতায় ভরিয়ে তুলি
রাত্রি ভরা চুপকথা...
কিন্তু একদিন মাঝ পথেই থামাতে হল
আমাদের গল্প লেখা, ঐ যে পাখি গুলো ডেকে উঠেছিল! 
কি ছিল সেদিনের সেই শেষনা হওয়া গল্পে? মনে নেই,
শুধু মনে একটা ফাঁকা জায়গা খাঁ খাঁ করে পড়ে আছে।

খালি মনে হয়,  অনেক কিছু লেখার ছিল,
পুরোটা সময় পেলে হয়ত শেষটায় অসাধারণ কিছু      
বলা বা করা যেত! 
মনে হয়, ঐ একদিনটা যদি পাওয়া যেত, তাহলে
বোধহয় ঐ গল্পটাকে সঙ্গে নিয়ে আমরা দুজন
অমরই হয়ে যেতাম।

এখন রুক্ষ গরম হাওয়া কাঁধে শুকনো পাতা গুলো        
রাস্তার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে দীর্ঘশ্বাস ফেলে 
উড়ে যেতে যেতে বলে যায়, 'গল্পটা শেষ হয়নি এখনো!'
হলুদ চাঁদটা করুণ মুখে নারকেল গাছের পাতা ধরে
ঝুলতে ঝুলতে বলে, ' শেষটা হয়ত সত্যিই সুন্দর হতে পারত!'

মূল কথা হল, সেইদিনটা ঠিক কবে ছিল, মনে নেই।
মনে নেই, সেই গল্পটাই বা কি ছিল।
শুধু মনে আছে, আমাদের একসাথে লেখা
একটা গল্প এখনো অসমাপ্ত পড়ে আছে...            
           
                    

Thursday, 2 April 2020

।। তুই আসবি যখন ।।

আমি কখনো ফুল বিছানো পথ দেখিনি চোখে,
তাই তুই বরং কালো পিচের রাস্তা ধরেই আয়।
আমি কখনো রামধনূ রঙ গায়ে মাখিনি জীবনে,
দেখিনি চাঁদের দেশের চরকা কাটা বুড়ীকে,
তাই তুই বরং ঐ চাঁদ তারা ফুল রামধনূ রঙ ভুলিয়ে দিয়ে
দিনের স্বচ্ছ আলো মেখে একটু বাস্তব হয়েই আয়।
তোর জন্য চাই তো আনতে একশো আটটা নীল পদ্ম,
সরাতে চাই পৃথিবীর সব জঞ্জাল, বাকি অনেকের মত।
কিন্তু জানিনা ঠিকানা পদ্মবনের,  আর সত্যি বলতে কি
একার পক্ষে পৃথিবী পরিষ্কার করার ক্ষমতাও নেই আমার।
তার চেয়ে বরং তুই আয়, একটু ধৈর্য নিয়ে।
আমি কোদাল, ঝাঁটা, ন্যাতা জুটিয়ে রাখছি
দুজন মিলে ধূয়ে মুছে একটা পরিষ্কার দালান বানাবো তখন,
আর ফুল ফল গাছ নানারকম সাজাস বাগান তোর ইচ্ছে মত।
তুই আমার কবিতা হয়ে আয়, যে কথা বলা হয়নি, লেখা হয়নি, সেই অজানা কাব্য লিখবি আয়।
আমার না গাওয়া গানের সুর হয়ে তুই আয়।
অনেক গল্প বাকি আছে, একসাথে রাত জাগবো,
তুই আয়।
অনেক সুখ দুঃখ বাকি আছে, প্রাণ খুলে হাসব কাঁদব,
অনেক স্বপ্ন দেখার বাকি আছে, আয়, 
ভালোবাসবি বলে আয়।।