Thursday, 26 December 2019


সারাদিন প্রতিটা আঙুলের ডগা থেকে 
বিন্দু বিন্দু করে শব্দ ঝরে পড়ে মাটিতে।
কপালের ঘামে ভেজা এক একটা অক্ষর 
ঘাড় বেয়ে শিরদাঁড়া বরাবর নেমে যায় পা-এর পাতায়।
তারপর হোঁচট খেতে খেতে, মিশে যায় ধূলো বালিতে।
মাথার মধ্যে জ্বলতে থাকা আঙরার ভাপে,
বুকে জমে থাকা শব্দ গুলো গলতে থাকে অল্প অল্প করে, সারাটাদিন ধরে। 
চোখের সামনে অথচ অগোচরে খুব সন্তর্পণে প্রতিদিন অজস্র শব্দ আমাদের শরীর ছেড়ে,
মিশে যায় হাওয়ায়, জলীয় বাষ্পের মত।
সন্ধ্যের দিকে, নিরাপদ দূরত্বে, ঠিক দীগন্ত রেখা পেরিয়ে, সব শব্দরা হয় জড়ো।
আর ছায়া পড়ে আকাশের গায়ে। 
সূর্য পশ্চিমে হেলে যায় যত, সেই ছায়া হয় দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর।
রাতে বৃষ্টি পড়ে,
শরীরেরও বুঝি মনকেমন করে - 
হারানো শব্দের টানে।
রাতে বৃষ্টি পড়ে তাই, ছায়াদের নামে।।




Wednesday, 27 November 2019

সাধারণ একটা ভোর..

নিছক সাধারণ একটা ভোর..

ভালোবাসা যেন হালকা পালকের মত মেঘ,
ঢেকে থাকবে গায়ে, অথচ
সহজে বোঝা যাবে না - 
আছে কিন্তু নেই, নাকি নেই তবু আছে!
চোখে চোখ রাখলেই দূর থেকে ছুটে আসবে
একদল বেখেয়ালি হাওয়া - 
আর হাওয়ার ধর্মই যা, ঘিরে রাখবে
অদৃশ্য আঁচলের মত।
আরও কাছাকাছি আসলেই, সারা শরীরে 
সূক্ষ্ম তড়িৎ প্রবাহ - 
ঠিক লতানো গাছের মত জড়িয়ে ধরবে
হাতের আঙুল, কাঁধ, গলা - তারপর -
ঠোঁটে ঠোঁট রাখলেই হবে সূর্যদয়।
আকাশের কাছাকাছি  লালচে দীগন্তে তখন
মুশলধারে বৃষ্টি নামবে...

আর ভেজা মাটিতে  স্যাঁতসেঁতে সকালে 
কুয়োর ব্যাঙগুলো  জানতেও পারবে না,
মেঘেদের ওপারে অন্য একটা  আকাশে 
দুটো মানুষ কি ভীষণ ভাবে 
দুজনের প্রেমে পড়ে গেছে।।

Sunday, 10 November 2019

ঘর

আমার একটা ঘর আছে এই সংসারে।
বুকের কাছের বড়ো আপন সে ঘর,
ঠিক যেমনটা সবার থাকে।
সেই ঘরে নীল আকাশ থাকে, 
সবুজ ঘাসের মাঠও থাকে।
শান্ত স্নিগ্ধ হাওয়া থাকে, 
মিষ্টি ফুলের গন্ধ থাকে। 
রামধনু রঙ স্বপ্ন থাকে। 
একটাই ঘর, 
যে ঘরে ভালোবাসার ভরসা থাকে। 
ঘরের কোনো দেয়াল নেই, নেই 
জানলা দরজা খোলা বন্ধের ঝুট ঝামেলা।
আমার সে ঘরে যদি কারোর চোখের মায়া থাকে, 
তবে তোমার ঘরে হয়ত অন্য কারো হাসির মেলা।
ঘরটা বুঝি পাহাড় কোলে, সাগর ঢেউয়েও হতে পারে। 
কিংবা রঙিন তুলির টানে মেঘের দেশে। 
হতেও পারে সে ঘর কোনো ব্যাকুল সুরে, ভিন শহরে।
ঘরটা বুঝি স্মৃতি বোঝাই, খড় আর কুটো।
ঘরটা বুঝি ইচ্ছেডানা।
কারো মনের গলি পথে, হয়ত ঘরের শেষ ঠিকানা।
সে ঘর ভীষণ দরকারি যে, সে ঘর ছাড়া বৃথাই বাঁচা।
বিশ্ব ভুবন পাড়ি দিলেও মন পাখিটার ওটাই খাঁচা।
সবার মতই আমারও একটা ঘর আছে যে,
বড্ড আপন, বড্ড কাছের একখানা ঘর -  
এ সংসারে।

Saturday, 9 November 2019

একটা নতুন সকাল হবে।
কিছু চেনা পাখির ডাকে, কিংবা alarm clock এর দাবড়ানিতে।
সকাল হবে বাড়ির ছাদে।
সকাল হবে বনসাই এর পাতার ওপর 
নরম আলোর আলতো ছোঁয়ায়।
পূর্ব দিকের জানলা গোলে ।
সারা রাতের স্বপ্ন গুলো হুরমুরিয়ে 
বেড়িয়ে যাবে।
রোজের মতই।
ঠোঁটের কোণায় অল্প হাসির সকাল হবে।
মন খারাপ আর মন ভালোতে এক কাপ চা,
things to do এর লিস্টি হাতে,
ভিড় রাস্তার traffic rule এ সকাল হবে।
নিয়ম মাফিক জীবনযাত্রা, শ্বাসকষ্টে, গলদঘর্মে,
সকাল হলেই বেঁচে ওঠার আরও একটা সুযোগ পাবে। 
নতুন একটা রাস্তা খোঁজার মহাজাগতিক  চাহিদাতে সকাল হবে।
সকাল হবে পাঁজর চিড়ে, বুকের বাঁ দিক ঘেঁষে, 
চিকণ সুতোর রুমাল মোড়া জীবনটাকে মুঠোয়  ধরে।
আকাশ জোড়া শান্ত নীলে, 
তোমার আমার সুখ দুঃখের লালচে আভায় কালকে আবার সকাল হবে।।




 




Thursday, 7 November 2019

।। লীলা।।

আবার সেই হাতছানিটা।
শুকনো আকাশ যেই শোনে আমরা দুজন দেখা করব,
অমনি কেমন ঘন নীল বা কালো মেঘে সেজে গুজে চলে আসে ঠিক, সঙ্গ নিতে।
বৃষ্টির আর দোষ কি বল, আমিই বোধহয় বর্ষা লগ্নে জন্মেছিলাম।
হাতের কাছে ছাতা রাখিনা সেটা আমারি বাহাদুরি।
আবার সেই বুক ঢিব ঢিব ভাব, পেটের ভেতর মেঘ গুড়গুড়,... ওই অবধি থাক।
 বজ্রাঘাত তো অনেক হল এক জীবনে।
এখন শুধু ভেজা মাটির গন্ধ থাকুক গভীর মনে।
কিন্তু প্রশ্ন হল,  দেখা আমরা করব কোথায়?!
সেই পুরনো ফুল গাছটা আর নেই যে এ চত্তরে।
নদীর জল শুকিয়ে গেছে,  অনেকদিনই।
নৌকা চড়া অসম্ভব, আর দিঘির ধারে, বহুতলের ঠেলাঠেলি।
আমাদের মধ্যিখানে বহুযুগ যেন কেটে গেছে, এক পলকে।
কেইবা জানতো সেই দুজনে দেখা করার স্বপ্ন দেখব জনান্তিকে।
আবার যখন ডাক পাঠালি, শুনতে পেলাম আমিও যখন কপাল জোরে ,
 তখন যায়গা খোঁজা কঠিন কি কাজ!
সময় যখন গড়িয়ে গেছেই অনেকখানি,
শহরে এখন আমরা যেন বড্ড বেশি বেমানানই।
চল তবে যাই অনেকদূরে, এমন কোথাও দুজনের যেন নতুন লাগে।
একটুখানি হাতছানিতে, সব ছাড়িয়ে নিরুদ্দেশে।
আবার যখন দেখাই হবে,
ক্ষতি নেইতো যদি হারিয়েই যাই আরও একবার ভালোবেসে।।

Tuesday, 27 August 2019

তোমার বিরুদ্ধে দাঁড়াবো আমি।
নতুন করে জ্বালবো আগুন
ভিজে খড়কুটো, সবুজ ঘাস,  আর যা কিছু অদাহ্যে।
তোমার উঠোনের মাঝ বরাবর চিড়ে
হাতা খুন্তি, সুতলি দড়ি, চুলের কাঁটা জড়ো করে
শক্ত হাতে তুলব পাঁচিল সারা রাত ধরে।
একটা অন্য দেশ গড়ব আমি।
এক ছাদের নিচে বাস করার
ছোটো খাটো তোমার যত ফন্দী
আমি জানি, ওদের নামই পিছুটান,
অকারণ অজুহাত, আর মান- অভিমান।
 ছুরি কাঁচিতে সান দিয়েছি
কাটব যত বিনিসুতোর মালা।
তোমার সাথে আমার হবে প্রবল ঝগড়াঝাটি।
তাই তোমার থেকে আলাদা হব আমি।
আমার ভাবনাগুলো আমার মতন থাক,
একটু যেন যুদ্ধবাদী, খামখেয়ালী
তোমার সুখের ঘরের ভেতর শুধুই
যেন শান্তি ভাঙার ছলচাতুরী।
এবার থেকে এক দলে নয়, নয় পাশাপাশি,
তুমি আমি  বিরুদ্ধতা খোলা মাঠে মুখোমুখি।।




Tuesday, 20 August 2019

হাতটা কোনোভাবে বাড়িয়ে দাও
কেউ না কেউ ঠিক ধরে নেবে।
টেনে তুলে নেবে চলন্ত গাড়িতে,
তখন পায়ের নীচে ফুটবোর্ড, তুমি নিশ্চিন্ত, সময় তোমায় ফেলে যায় নি।
হাতটা কোনোভাবে বাড়িয়ে দাও
কেউ না কেউ ঠিক ধরে নেবে।
টেনে তুলে নেবে তার নৌকায়,
তখন হাওয়ায় বুক ভরা নিশ্বাস, তুমি জীবিত,
মৃত্যু তোমায় ছুঁতে পারেনি।
কিন্তু যদি কেউ হাতটা না ধরে, তাহলে বন্ধু
ছুটে যেতে হবে আরও কিছুক্ষণ,  লড়ে যেতে হবে দম বন্ধ করে।
তুমি শুধু হাতটা বাড়িয়ে রেখো..
মনে হয়, সময় চলে যাওয়ার আগে, তোমায় মৃত্যু ছোঁয়ার আগে,
বিশ্বাস তোমার হাতটা একবার হলেও ঠিক ধরে নেবে।।


Monday, 29 July 2019

ইচ্ছে নদীর একলা জল,
ভাঙা মন, আর ছলাৎছল।
পাথর চাপা বুকের কাছে,
খুব গোপনে নাও বাঁধা আছে।
হঠাৎ বৃষ্টি,  বাড়ছে ঢেউ,
পাড় ভাঙলো,জানলো না কেউ।
কোথায় নৌকো, কোথায় হাল,
পাঁজর চিড়ে একটা কুমির,
নিঃশব্দে কাটছে খাল।
ভাঙছে সাধের ঠুনকো ঘর,
শান্ত হাওয়ায় , তুমুল ঝড়।
ঝলসানো রাত, দূরের আকাশ, চাঁদটা চুপ।
স্বপ্ন বোঝাই শাড়ীর আঁচল,
কলসি দড়ি দিচ্ছে ডুব।
বুড়ো বট গাছ, জলের জীবন মরণ কালের সাক্ষী থাক।
বর্ষা শেষের সুদূর পথে, একলা নদী সাগর পাক!

Monday, 22 July 2019

শব্দরা কখনো এলোমেলো, কখনো একজোটে মাঠে নামে।
যাকে তুমি পাগল ভাবো, সে তারাদের গতিপথ জানে।
শব্দরা রোজ হুড়োহুড়ি,  শব্দরা জটলা বা সমাবেশ।
মিছিলের আগে প্রতিশ্রুতি হাত নাড়ে।
আর ঝড়ে উড়ে যায় ঘর, বাণে ভেসে যায় দেশ।
তবু অলিতে গলিতে ভাঙা রকেতে শব্দরা বাজি ধরে।
পোড়ো আটচালা, চেনা সন্ধ্যেতে দোকানীরা রোজ স্বপ্ন বিক্রি করে।
হুজুগে হাওয়া আজ বিবাগী তো কাল বিবাদী গান গায়।
যে শব্দেরা নদী হয়ে বয়ে যেত কোনো কালে
আজ মুখ বুজে পড়ে থাকে রাস্তায়,  পুরনো পাড়ায়।
তবু হায়!
মাটিতে আকাশে রক্তে ঘামেতে ভোজবাজি,  কারসাজি।
কথায় কথায় একই কথা বারবার।
তবু হায়!
পতনের পথে জরাক্রান্ত ইতিহাস নিমরাজি।
বর্ণে ধ্বনিতে ঠোকাঠুকি শুধু চিৎকার, হাহাকার।
আজ শব্দরা যেন বড়ই এলোমেলো।
তবু শব্দরাই একজোটে মাঠে নামে।
তুমি যাকে ফেলনা ভেবেছিলে, জেনো
সেও রোজ ঘরে মৃত্যুর দামে জীবনকে কিনে আনে।।

Tuesday, 2 July 2019

আমার রোজ সকালের এক নিয়ম- এক কাপ চা সাথে আধখানা বিস্কুট।
এক বেগদা বারান্দায় বসে সামনের বাড়ির দেওয়ালের রঙে বাকি
আধখানা স্বপ্নের সবুজ পৃথিবী কল্পনা করার সুখ – কাউকে বোঝানো যায় না।
সপ্তাহের মাঝখানে কোনো একদিন অফিস ফিরতি পথে
আধা কিলো  মাংস কিনে বাড়ি ঢুকে রোববার দুপুরের ভাত ঘুম
দেওয়ার  বাকি অর্ধেক শান্তি সাজানোর স্বপ্ন স্নানঘরে রাখা
বালতির জল ছাড়া আর কেউ জানে না।
তোমাকে অর্ধেক ভালোবেসে আকাশের দিকে মুখ ফিরিয়ে বসে
কয়েকটা তারা গুনে ফেলার পর বাকি থাকা রাতটা হিসেবের খাতা খোলে।
এর পরের গল্পটা শুধু রাত্রি জানে, আর কেউ না।
প্রতিদিন জমিয়ে রাখা সমস্ত অসম্পূর্ণ আধখানারা জটলা করে - আশা, ইচ্ছে , স্বপ্ন,  গল্প আরও কতজন!
তাদের কারো মুখ ভাড় – রাগে না অভিমানে বোঝা দায়!
কারো মুখে লজ্জার লালচে আভা,  কেউবা সদ্য হওয়া বৃষ্টিতে ভেজা
গাছের পাতার মত – কিছুটা এলোমেলো কিছুটা স্যাঁতসেঁতে।
হিসাবের খাতার অঙ্ক সোজা – সব আধখানাদের বাকি আধখানা দিয়ে অসম্পূর্ণ থেকে
সম্পূর্ণ করে দেওয়া যাক।
আমি পাশ ফিরে শুই। এ হিসেব আমার মঞ্জুর নয়। আমি আরও অনেক অর্ধেক জমাতে চাই।
আমার জমানো আধা টুকরো গুলোর বাকি আধা টুকরো খুঁজতে খুঁজতে বেঁচে থাকার যে
চাহিদা তা বোঝানো যায় না!
আমার আবার সকাল হয় তাই এক কাপ চা আর আধকানা বিস্কুটে…

Bahut Dino ki baad jhanki Jo Dil mein
girhein hai kayi par gila to nahi..
Purana sa sawal ek pucha tha Jo un aankhon ne
pyaar tha Sayed par ranjishein nahi..
baat baat pe uske rakkhe huye haath kandhon pe apni
Marzi thi Meri, takleef nahi.
mutthi bhar ek pal chhipayi thi Jo
seene mein
unglion se phisal Gaya hai kab ki
woh kisiki waqt ka mohtaj to nahi.
Bahut Dino ki baad jhanki Jo Dil mein
Ek dhundla sa khwab hai par dagha to nahi
AajKal Meri udasiyan hairan si ho gayi hai
pata nahi, kaha Iska Dil aur kaha dimag hai..
tanhaiyan baksh do to khush jati hai,
bezuban hothon par khil jati hai,
jaise hawa me hai barish ki mahek,
jaise sason me hai ek saundhapan..
aajkal yuhi nam ho jati hai palke
aksar bhig jati hai dhadkan..
sawan ka mausam hai Shayad
ghataon se ulajh ke bikhar gayi hai hayraniyan,
warna bahut suljhisi hai Kalam ki aage kagaz par Meri udasiyan..
Woh baithi thi darwaze par..
Kuch sawal liye aankhon me.
Aaj raat thodi gehri si chhayi hai..
Chand bhi dhire se aya hai chokhat pe..
Sayed nahi pata tha jabab kuchh usko bhi...
Sayed mann mein sawal hai dusra kuchh uska bhi..
Woh baithi thi darwaze par..
Chhipi hui aansoon liye aankhon me..
Kuch raaz dabi hai
Un bhigi palko ke niche..
Woh Chand bhi aaj chhupa Raha hai Parchhaiyan koi chandni ke pichhe..
Kuhre ki chadar tale mujhe gumrah mat karna
Aaj Sunni hai kahani unki
Jo baithe hai choukhat par seene me apni Chand liye..

Thursday, 27 June 2019

বড় দীর্ঘ  বসন্ত।
ঋতু পরিবর্তন শহরের সয় না।
শহুরে শরীরের ভেতর সময়ের জাঁতাকল প্রতিনিয়ত রক্ত মাংস গুলো পিশে দলা পাকিয়ে দেয়।
শহুরে মন বড় অল্পেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে।
চোখ কান বন্ধ করে কোনোমতে সারাটা দিন কাটাতে পারলেই আসে রাত।
শহুরে মনের বড় আকাঙ্ক্ষিত এই রাত।
নিয়ন আলো জ্বলে ওঠে আনাচে কানাচে,
সে আলো চোখে লাগে না,
লাগে কালো আকাশে লালচে নেশা।
চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে আলতো কোলাহল,
শহুরে মানুষের খুব প্রিয় এই অভ্যস্ত কানাঘুষো।
ভৌগলিক ব্যাখ্যায় শহরের বুকে সারাক্ষণ চলে হাওয়ায় হাওয়ায় টানাপোড়েন।
একটু নোনতা আর একটু এলোপাথারি ভাবনা।
বড় বড় হোর্ডিং বোর্ড এ শহরের হাসি খুসি মুখ।
বিজ্ঞাপনে রঙিন ভালোবাসা এলোমেলো।
দিন পাল্টায় কিন্তু শহুরে প্রেম পাল্টায় না।
যখন চরম উপেক্ষার মোড়কে শীত গ্রীষ্ম বর্ষা,
তখনও এ শহর শুধু ফাল্গুনে বিশ্বাসী।। 

Monday, 24 June 2019

সূর্য অস্ত্য গেছে বেশ কিছুক্ষণ আগে, ঘড়ি বলছে।
আকাশের গায়ে এখন নানা রঙের মেলা হওয়ার কথা।
কিন্তু তুমি বললে বলেই অত রঙ খরচ না করে শুধু নীল আর সাদা এনেছি সাথে। 
আজ কি বিশেষ কোনোদিন! না কি তোমার মন খারাপ! আমায় সাদা
রঙ আনতে বললে কেন! এবার তো রাত নামবে, ঘড়ি বলছে, 
তাহলে কালো রঙটাই ভালো মানাতো না?!
এইসব এটা ওটা ভাবতে ভাবতে কখন যে পরতে পরতে নীল এঁকেছি খেয়ালই করিনি।
 চোখে আলো লাগায় হুঁশ ফিরল যখন, 
দেখি তুমি তারা জ্বেলে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছো। ঘড়ি বলছে
রাত নেমেছে অনেক্ক্ষণ আগে। 
তোমার চোখে চোখ রেখে গড়গড় করে বলে ফেললাম, “আজ কি? 
বাকি রঙ গুলো যে বাকি পড়ে গেল! আমি তো শুধু নীল আঁকলাম তোমায় জুড়ে!”
তুমি তারার আলোটা দূরে সরিয়ে রেখে বললে, “আমি তো আকাশ নই, অত রঙে আমার কাজ কি!
তোমার সাজানোতেই আমার তৃপ্তি”।
রাতের অন্ধকারেরও যেন একটা গোধুলী রঙ হয়। ভেজা পাথরের বুকেও নিবিড় উষ্ণতা থাকে।
গাঢ় নীলে ডুবে যেতে যেতে হঠাৎ থমকে গেলাম, ঘড়ি বলছিল কিছু..
আবারও তোমার চোখে চোখ রেখে বললাম, “আলো নিভে গেছে সেই কখন! এবার আমার যেতে হবে যে,
সাদা রঙটার কি করব তবে?”
তুমি বললে, “ওটা তোমার জন্য, যখন আমার কাছে থাকো সাদা রঙটা তোমায় মানায় ভালো”।
হাসি পেল, “সাদা আবার রঙ নাকি, ওতো রঙের অভাব!”
তারার আলোটা আরও কিছুটা দূরে সরিয়ে দিয়ে আমার খুব কাছে সরে এসে বললে, “বেশ তো, তাই তো ভালো”।…
ফেরার পথে মনে হল, সত্যিই তো আজ ছিল বিশেষ দিন, দৈনন্দিন।।

Wednesday, 1 May 2019

সময় হবে শেষ
চলে যেতে হবে শেষমেশ।
ফেলে যেতে হবে হাতে রাখা কাজ।
ভুলে যেতে হবে যাকিছু মনে আছে আজ।
তাই লিখে রাখি নাম, জিনিসের দাম।
লিখে রাখি কোথায় কি তুলে রাখা আছে,
দেরাজেতে আছে কিছু চিঠি ভরা খাম।
সময়ের শেষ ভাগে পৃথিবী বিবর্ণ হবে জানি।
তাই আঁকি ঘর, আঁকি আমাদের সুখ
রঙিন ফুলের গাছ
আর চেনা অচেনা মানুষের মুখ।
শেষে চলে যেতে হবে একা।
তোমাদের সব কথা হবেনা শোনা,
হবে না আমারও বাকিটা বলা।
তবু কটাদিন তোমাদের সাথে বেঁধে বেঁধে থাকা।
আরো কিছু দিন তাই সুর ছুঁয়ে লিখে যাই গান।
মুছে দিতে চাই হিসেবের ঋণ,
আছে যত দোষ ত্রুটি, আর মান অভিমান।
পাহাড়ের দেশে, সময়ের শেষে  চলে যাই যদি।
কবিতারা তারা হয়ে যাক,
সাগরের পথে বয়ে যাক নদী।
একদিন সময় হবে শেষ,
নিবে যাবে কিছু কিছু আলো,
কেটে যাবে আবেগের রেশ।
 তোমাদের দিয়ে যাই
তাই কিছু তুলে রাখা আশা।
স্বপ্ন যাকিছু তোমাদের নিয়ে দেখা,
মুঠো ভরা বিশ্বাস আর ভালোবাসা।।

Friday, 1 February 2019

অহেতুক আশাবাদী

যখন তুমি নীল আঁচলে ঢাকো
অনতিদীর্ঘ সিঁদুরে দিগন্ত রেখা।
তখন সন্ধ্যে নামে আমার ঘরে।
আমি কাঠকয়লা জড়ো করে রাখি।
তোমার নীল আঁচলে আগুন আঁকব বলে।
সারাদিনের দাহকান্ড সেরে, নিবু নিবু চিতার
সামনে দাঁড়িয়ে আমি হাত রাখি তোমার গোধূলি মাখা হাতে।
অমনি তোমার আঁচলের নীল গাঢ় থেকে গাঢ়তর।
তুমি রাত্রি মাখো চোখে, ঢাকবে বলে
আমার গায়ের শব পোড়ানো কালো।
গভীর রাতে যখন তুমি স্বপ্ন দিয়ে জড়িয়ে রাখতে চাও,
আমি দেখি আকাশ জোড়া বিরাট শ্মশানভূমি।
তোমার শরীরে লক্ষ আলো নেভে জ্বলে
যেন নিঃশব্দে চিতায় জ্বলন্ত বিশ্ব।
তবু তুমি শান্ত একটা ভোর আনবে বলে
আলতো হাওয়ায় ঠোঁট ছুঁয়ে যাও ভালোবাসা।
আর ঘুম ভেঙে যায় আমার।
মনে হয়..
আমাদের পরিচয় অবধি ঠিক ছিল,
ভালো না বাসলেই বোধহয় হত ভালো।
যে আমি মৃত্যুর কারবারি, তাকে তুমি রোজ
সম্ভাবনার কথা বলো!?

Friday, 11 January 2019

শোক সংবাদ


আজ কোথাও কোনো সাড়াশব্দ নেই।
ওরা আর কারো দুঃখে কাঁদে না,
ওরা দুঃখে সবাই মরে গেছে ।
বিবর্ন স্বপ্নের শব পড়ে আছে অলিতে গলিতে।
ওদের ভেঙে যাওয়ার ভয় নেই আর,
ওরা হাওয়ায় মিশে অমর হয়ে গেছে।
ওরা কোনো সবুজের প্রতিশ্রুতি দেয়নি কাউকে,
গায়নি কোনো ভালোবাসার গান,
ওরা অভিনয় জানতো না ভালো করে।
ওদের নিঃশ্বাসে ধূলো, চোখে ধোঁয়া
ওরা রঙিন পৃথিবী আঁকেনি কখনও।
 তাই আজ ওরা কেবলি বেওয়ারিশ লাশ।
ওরা কারো সুখে জ্বলে না আর,
ওরা সুখে পাথর হয়ে গেছে।
আজ শহরে আওয়াজ নেই কোনো।
আলো জ্বলেনি কারো ঘরে।
খাবার আগলে বসে নেই কেউ কারো জন্য।
জানে সবাই ওরা আসবে না আর ফিরে।
আজ গণহত্যা হয়েছে শহরে,
বাকিরা ইচ্ছামৃত্যুর পথ নিয়েছে বেছে।
আজ শহরে শীত নামবে প্রবল,
আবহাওয়া দপ্তর ঘোষণা করেছে
বেশ  কিছুদিন আগে।
কোথাও কোনো সাড়াশব্দ নেই,
আজ শহর যেন বিরাট শ্মশানভূমি,
ওদের মৃত্যুর পরিসংখ্যান নেই,
শুধু  সাক্ষী থাকে  জননী জন্মভূমি।।